বুধবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ার মঙ্গলবারের দরপতনের প্রবণতা থেকে পুনরুদ্ধার করেছে, যে বিষয়ে আমরা আগেই সতর্ক করেছিলাম। মঙ্গলবার ইউরোর দরপতনের জন্য শক্তিশালী কোনো কারণ ছিল না, এবং স্বাভাবিকভাবেই সেদিন প্রকাশিত সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফল আসলে ইউরোকেই সহায়তা করার কথা ছিল। মনে রাখবেন, ইউরোজোনে মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে থাকায় 2025 সালে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক আরেক দফা মুদ্রানীতি নমনীয় করার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম। আরও মনে রাখবেন, যখন ইসিবি সক্রিয়ভাবে মূল সুদের হার কমাচ্ছিল এবং ফেডারেল রিজার্ভ কোনো পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত ছিল, তখনও ইউরোর দর বৃদ্ধি পাচ্ছিল। এখন সেপ্টেম্বর মাসে পরিস্থিতি একেবারে বদলে যেতে পারে: ফেড মূল সুদের হার কমানো শুরু করতে পারে, আর ইসিবি কোনো ধরনের পদক্ষেপ নাও নিতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে ডলারের মূল্যের কী ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে—তা সম্ভবত সবার কাছেই স্পষ্ট।
এছাড়া, মঙ্গলবার প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের ISM উৎপাদন সূচক এবং বুধবার প্রকাশিত JOLTs কর্মসংস্থান সৃষ্টি সংক্রান্ত প্রতিবেদনের প্রত্যাশার চেয়ে দুর্বল ফলাফল প্রদর্শন করেছে। যদিও JOLTs-এর প্রতিবেদন দুই মাস দেরিতে প্রকাশিত হয়, এটি আরেকটি সূচক যা ডলারের ক্রেতাদের সন্তুষ্ট করতে ব্যর্থ হয়েছে। সুতরাং, আমরা এখনো এই পেয়ারের দরপতন বা ডলারের দর বৃদ্ধির কোনো যৌক্তিক কারণ দেখছি না। ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট বিদ্যমান রয়েছে, যা দূর থেকে দেখলেও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।
বুধবার 5-মিনিটের চার্টে তিনটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। নতুন ট্রেডাররা যেকোনো একটি সিগন্যাল কাজে লাগিয়ে ট্রেডিংয়ের চেষ্টা করতে পারত। তবে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট বিদ্যমান থাকায় এখানও প্রবণতাভিত্তিক মুভমেন্ট বা উচ্চ মাত্রার অস্থিরতার প্রত্যাশা করা উচিত নয়। সিগন্যালগুলো যথেষ্ট কার্যকর ছিল, কিন্তু যখন মার্কেটে মুভমেন্ট সৃষ্টি হয় না, তখন কোনো সিগন্যালই কার্যকরভাবে কাজে লাগানো যায় না।
ঘন্টাভিত্তিক চার্টে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের চলতি বছরের শুরু থেকে গঠিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে, তবে আপাতত ফ্ল্যাট মুভমেন্টই বজায় আছে। মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো মার্কিন ডলারের জন্য প্রতিকূল, তাই ডলারের দর বৃদ্ধির প্রত্যাশা করছি না। আমাদের মতে, আগের মতোই মার্কিন মুদ্রা কেবল টেকনিক্যাল কারেকশনের উপর নির্ভর করতে পারে।
বৃহস্পতিবার EUR/USD পেয়ার যেকোনো দিকেই ট্রেড করতে পারে, কারণ মূল্য এখনো সাইডওয়েজ চ্যানেলের মধ্যে রয়েছে। বর্তমানে এই পেয়ারের মূল্য 1.1655–1.1666 এরিয়ার আশেপাশে রয়েছে, তাই এখান থেকে পজিশন ওপেন করা যেতে পারে। এই এরিয়ার নিচে কনসোলিডেশন হলে মূল্যের 1.1590-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে এই পেয়ার বিক্রি করা যেতে পারে, আর উল্লিখিত এরিয়ার উপরে কনসোলিডেশন হলে মূল্যের 1.1730-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে এই পেয়ার ক্রয় করা যেতে পারে।
5-মিনিটের চার্টে যে লেভেলগুলোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে: 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1552–1.1563–1.1571, 1.1655–1.1666, 1.1740–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908। বৃহস্পতিবার ইউরোজোনে তুলনামূলকভাবে স্বল্প গুরুত্বসম্পন্ন রিটেল সেলস বা খুচরা বিক্রয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, আর যুক্তরাষ্ট্রে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ISM পরিষেবা খাতের PMI প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এই সূচকের ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে কম এলে নতুন করে ডলারের দরপতন হতে পারে।
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।