ব্রিটিশ পাউন্ডের ওপর চাপ বেড়েছে, কারণ ব্যাংক অব ইংল্যান্ড সতর্ক করেছে যে $1.7 ট্রিলিয়নের বেসরকারি ঋণপ্রবাহের ব্যাপক বৃদ্ধির সঙ্গে সাবপ্রাইম ঋণ সংকটের মিল রয়েছে। এটি আরও জোরালো হয় যখন যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা মার্কেটে স্ট্রেস টেস্ট পরিচালনার পরিকল্পনা নিশ্চিত করেন।
ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি মঙ্গলবার পার্লামেন্টারি কমিটির সামনে বলেন, বেসরকারি ঋণ খাতে কিছু উদ্বেগজনক সংকেত পাওয়া যাচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাঁর কথোপকথনের সময় তাঁরা আশ্বস্ত করেন যে, "আমাদের খাতের সব কিছুই ঠিক আছে"—তবে শুধু রেটিং এজেন্সিগুলোর ভূমিকা বাদে। বেইলি জানান, এই রেটিং প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঘিরেই সেই বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে যা সাবপ্রাইম মর্টগেজ সিকিউরিটাইজেশন চলাকালীন দেখা গিয়েছিল। লন্ডনের হাউস অব লর্ডস ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস রেগুলেশন কমিটিতে শুনানির সময় বেইলি বলেন, "আমরা আবার সেই সিনেমাই চালাতে যাচ্ছি না তো?"
যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধানের (যিনি আবার বেসেল-ভিত্তিক ফিনান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি বোর্ডের চেয়ারম্যান) এই মন্তব্য বৈশ্বিক বেসরকারি ঋণবাজারের বর্তমান অবস্থাকে ঘিরে সর্বশেষ সতর্কবার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের ফিনান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটির ডেপুটি গভর্নর সারা ব্রিডেন সম্প্রতি এই খাতে ঝুঁকির মূল কারণ হিসেবে স্বচ্ছতার অভাব, অতিরিক্ত ঋণ গ্রহণ, এবং ব্যাংকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংযোগের কথা তুলে ধরেন।
নীতিনির্ধারকদের মতে, ২০০৮ সালের আর্থিক সংকটের পর থেকে ঋণবাজার ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হয়েছে। বীমা কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে এই বাজারে বন্যার পানির মতো মূলধন প্রবেশ করছে, যাদের নিয়ন্ত্রক সংস্থার ক্রেডিট রেটিংয়ের প্রয়োজন হয়। কোম্পানিগুলো এখন আরও জটিল স্ট্রাকচার্ড ফাইন্যান্স প্রোডাক্ট তৈরি করছে, যেমন ইনভেস্টমেন্ট গ্রেড রেটিংপ্রাপ্ত ফান্ড-ভিত্তিক বন্ড, যা মূলত বীমাভিত্তিক পুঁজি আকর্ষণের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে—এতে করে বাজারে আরও মূলধন প্রবেশ করছে।
এখন ক্রমবর্ধমানভাবে উদ্বেগ দেখা দিচ্ছে যে, এই খাতে অথবা বৃহত্তর লিভারেজড ক্রেডিট মার্কেটে কোনো সংকট সৃষ্টি হলে তা দ্রুত ব্যাংক এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে—বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট ব্রান্ডস এবং ট্রাইকালার কোম্পানির সাম্প্রতিক পতনের প্রেক্ষাপটে। এই ঘটনাগুলো জেপিমরগ্যান চেজ অ্যান্ড কোং-এর সিইও জেমি ডাইমনের সেই মন্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করে: "যদি আপনি একটা তেলাপোকা দেখেন, তাহলে ধরে নিতে হবে আরও আছে।"
বেসরকারি ঋণপ্রদান সংস্থার নেতারা পাল্টা দাবি করে জানিয়েছেন, সমস্যার মূল উৎস হলো ব্যাংক কর্তৃক ইস্যু করা ঋণ, এবং এটিকে নতুন মাধ্যম ব্যবহার করে ঋণ বাজারে প্রবেশ করার ঝুঁকি হিসেবে দেখা উচিত নয়। যদিও, বেইলি এটাও যোগ করেন যে, ফার্স্ট ব্রান্ডসের মতো ঘটনা একক ঘটনা না-কি অনেক বড় কিছু হতে চলেছে, তা এখনও নিশ্চিত নয়।
মনে রাখা প্রয়োজন, ২০০৮ সালের আর্থিক সংকটের ঠিক আগমূহূর্তে সৃজনশীল ঋণ প্যাকেজিংয়ের মাধ্যমে উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন ঋণসমূহকে যৌথভাবে নিরাপদ সিকিউরিটিজ হিসাবে পুনঃব্রান্ডিং করা হয়েছিল। এর ফলাফল ছিল শত শত বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষতি, লেহম্যান ব্রাদার্স ও বিয়ার স্টার্ন্সের পতন, এবং এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির উপর চাপ সৃষ্টি করা এক গভীর আর্থিক সংকট।
টেকনিক্যাল পূর্বাভাস – EUR/USD
বর্তমানে EUR/USD পেয়ারের ক্রেতাদের 1.1630 লেভেলটি ব্রেক করার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। কেবল এই লেভেলটি ব্রেক করলেই 1.1655 টেস্ট করার চেষ্টা করা যেতে পারে। এরপর সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা থাকবে 1.1700, তবে বড় কোনো ট্রেডারদের সহায়তা ছাড়া এই মুহূর্তে এই পেয়ারের মূল্যের সেখানে পৌঁছানো কঠিন। সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে 1.1725 লেভেল নির্ধারণ করা যেতে পারে। যদি এই পেয়ারের দরপতন শুরু হয়, তাহলে মূল্য 1.1605 লেভেলের আশেপাশে থাকা অবস্থায় ক্রেতাদের সক্রিয় হতে দেখা যেতে পারে। যদি সেসময় কেউ মার্কেটে কেউ এন্ট্রি না করে, তাহলে হয়ত 1.1575 লেভেল রিটেস্টের জন্য অপেক্ষা করা যেতে পারে অথবা 1.1545 লেভেল থেকে লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে।
টেকনিক্যাল পূর্বাভাস – GBP/USD
GBP/USD পেয়ারে ক্রেতাদের প্রথম কাজ হবে 1.3400 এর নিকটতম রেজিস্ট্যান্স লেভেল ব্রেক করা। কেবল এই লেভেলটি ব্রেক করলেই পরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা থাকবে 1.3440, যা ব্রেকআউট করে মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়া বেশ চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে 1.3485 লেভেল নির্ধারণ করা যেতে পারে। যদি এই পেয়ারের দরপতন শুরু হয়, তাহলে মূল্য 1.3360 লেভেলে থাকা অবস্থায় বিক্রেতারা মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করবে। যদি তারা সফল হয় এবং মূল্য এই রেঞ্জ ব্রেক করে ফেলে, তাহলে তা বুলিশ পজিশনে বড় আঘাত আনবে এবং GBP/USD পেয়ারের মূল্য কমে গিয়ে 1.3330-এ পৌঁছাতে পারে, এমনকি মূল্য আরও কমে 1.3300 পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।